বীজবিহীন বারোমাসী বিনা লেবু-১ চাষে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) বিজ্ঞানীরা। ময়মনসিংহসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে এ লেবুর বাম্পার ফলনে আগ্রহী হয়ে উঠছে স্থানীয় কৃষকরা। সারাদেশে চাষি পর্যায়ে সুস্বাদু এই লেবুর জাত ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। উন্নতমানের এই লেবুর জাতটি উদ্ভাবন করেছেন বিনার বিজ্ঞানী ও উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. রফিকুল ইসলাম।
এই লেবুর উদ্ভাবন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামের একটি স্থানীয় জাত থেকে জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে দীর্ঘ গবেষণার পর সফলতা পাওয়ায় ২০১৮ সালের শেষের দিকে বিনা লেবু-১ কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য নিববন্ধনের অনুমতি পায় বিনা। সম্প্রতি বিনা লেবু-১ ময়মনসিংহ সহ দেশের কয়েকটি অঞ্চলে চাষাবাদ হচ্ছে। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পাড় ঘেঁষে গৌরীপুর উপজেলার কাশিয়ারচর এলাকায় পাঁচ একর জমি লিজ নিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধীনে লেবুর চাষ করা হয়েছে। এর ফলনও হয়েছে আশানুরূপ।’
এই লেবুর প্রধান বৈশিষ্ট সম্পর্কে তিনি জানান, এ লেবু বারোমাসই ফলন দেয়। এটি সুগন্ধি যুক্ত এবং বীজবিহীন। এতে রসের পরিমাণ বেশি ও ভিটামিন-সি’র পরিমাণও বেশি। প্রতিটি গাছে প্রতি মৌসুমে ২৫০ থেকে ৩০০ লেবু হয়। বিনা লেবু-১ রোপণের ১০ থেকে ১১ মাস বয়সে ফল পাওয়া যায়। একটি গাছ ১৫ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। ইতোমধ্যে এই লেবু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ফলে লাভবান হতে শুরু করেছে কৃষকরা।
গৌরিপুর উপজেলার কাশিয়ার চর এলাকায় বিনা লেবু-১ চাষে সফল কৃষক ফজলুল। তিনি বলেন, ‘এই লেবু চাষের জন্য পতিত জমি লিজ নেই। বর্তমানে লেবু চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি। ক্ষেতে কাজ করার পাশাপাশি চারা নিয়ে বাগান করে আমার মতো স্বাবলম্বী হচ্ছে এই এলাকার আরও যুবকরা।’ বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করে বছরে এক লাখ টাকা আয় করা যায়। তাই ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ এ লেবু চাষে সারা দেশে উদ্যোক্তা তৈরি করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে।’